বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট ও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ ছিল, যা আরও এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে মার্কিন ডলারের ওপর নির্ভর করছে। মার্কিন ডলারের ভাগ্য সম্পূর্ণভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর নির্ভরশীল। মার্কেটের প্রায় সব মুভমেন্ট কোনো না কোনোভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। মনে হতে পারে যে আমরা সবসময় শুধু ট্রাম্পকে নিয়েই কথা বলি, তবে এমন কোনো বিষয়ে আলোচনা করে কী লাভ, যা মূল্যের মুভমেন্টে কোনো প্রভাব ফেলে না?
গতকাল যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে এপ্রিল মাসের পরিষেবা এবং উৎপাদন খাতের ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচক (PMI) প্রকাশিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যে এই সূচকগুলোর ফলাফল স্পষ্টতই দুর্বল ছিল, তবে ইউরোপীয় সেশনে ব্রিটিশ পাউন্ড যথেষ্ট ভালোভাবে অবস্থান ধরে রেখেছিল এবং দরপতনের কোনো সম্ভাবনা দেখা যায়নি। একইভাবে, মার্কিন ব্যবসায়িক কার্যকলাপের দুর্বল ফলাফলও মার্কিন সেশনে ডলারকে ঊর্ধ্বমুখী হতে আটকাতে পারেনি।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বুধবার 5 মিনিটের টাইমফ্রেমে বেশি কিছু তুলনামূলকভাবে নির্ভুল ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে, তবে এগুলো থেকে লাভ করা অত্যন্ত কঠিন ছিল কারণ মূল্য বারবার দিক পরিবর্তন করেছে। আমরা পূর্বেই সতর্ক করেছিলাম, মার্কেটে বিভ্রান্তি এবং বিশৃঙ্খলা এখনো বজায় রয়েছে। মূল্য 1.3289–1.3297 এরিয়ার কাছ থেকে চারবার রিবাউন্ড করেছে কিন্তু ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হতে ব্যর্থ হয়েছে। এই এরিয়া ব্রেক করার পরও ব্রিটিশ পাউন্ডের তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য দরপতন দেখা যায়নি, যদিও এটি আজ অব্যাহত থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে অনেক আগেই GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারত, তবে মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো শুধু ট্রাম্পের দিকেই মনোযোগ দিচ্ছে, তাই পাউন্ডের মূল্য স্থিতিশীলভাবে ঊর্ধ্বমুখী হয়েই যাচ্ছে। এক দিনের দরপতন নতুন কোনো নিম্নমুখী প্রবণতার সংকেত নয়। তাই এই পেয়ারের মূল্যের ভবিষ্যৎ মুভমেন্ট সম্পূর্ণভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং তার সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে—এবং আর কিছু নয়।
বৃহস্পতিবার GBP/USD পেয়ারের মূল্য কিছু সময়ের জন্য নিম্নমুখী হতে পারে, কারণ বৈশ্বিক বাণিজ্য সংঘাত প্রশমিত হওয়ার প্রাথমিক সংকেত দেখা দিতে শুরু করেছে। তবে ডলারের উল্লেখযোগ্য দর বৃদ্ধির জন্য ধারাবাহিকভাবে উত্তেজনা প্রশমনের খবরের প্রয়োজন।
বর্তমানে 5 মিনিট টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য উপযুক্ত লেভেলগুলো হলো: 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3145–1.3167, 1.3203, 1.3289–1.3297, 1.3365, 1.3421–1.3440, 1.3488, 1.3537, 1.3580–1.3598।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কথা নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যেগুলো মার্কেটের ট্রেডাররা উপেক্ষাও করতে পারে। ট্রাম্প রাতেরবেলা কোনো উল্লেখযোগ্য মন্তব্য করেননি, তাই মার্কেট কিছু সময়ের জন্য তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।